নেত্রকোনা জেলার নামকরন
নেত্রকোনার আদি নাম ছিল কালিগঞ্জ। নেত্রকোনা নামটি এসেছে নাটেরকোনা নামক গ্রামের নাম থেকে। গ্রামটির অবস্থান নেত্রকোনা জেলা শহরের উত্তরে। ‘পাগলপন্থী বিদ্রোহ’ দমন করার উদ্দেশ্যে সপ্তদশ শতকের শেষভাগে ইংরেজ সরকার নাটেরকোনা নামক স্থানে প্রশাসনিক কেন্দ্র স্থাপন করেছিল।নদী কেন্দ্রিক জেলা নেত্রকোনা। জেলার ভেতরে ছিল ছোট বড় প্রায় ৫৭ টি নদী। তার মধ্যে মগড়া নদী পুরো শহরকেই প্যাঁচিয়ে রেখেছে। কালের আবর্তে এসকল নদীর ইতিহাস হারিয়ে গেলেও শহরের নাম প্রবর্তনের ইতিহাস রয়েই গেছে। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ প্রান্তে। এখন যারা বা আরো আগে যারা ছিলেন কেউই সঠিক করে বলতে পারেন না সনটি। তবে তখন এই জেলার নগর সভ্যতা গড়ে উঠেছিল একটি কালিমন্দিরকে ঘিরেই। তৎকালীন গৌরিপুরের জমিদার রাজ রাজেশ্বরী দেবীর নির্দেশে তার পুত্র শ্রী ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী মহাশয় শ্রী শ্রী সর্বমঙ্গলা দেবীর নামে শ্রী শ্রী কালিমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মগড়া নদীর পাড়েই হয় এই মন্দিরের অবস্থান। তখন বড় বড় নৌকা ভিড়ত ওই মন্দিরের সামনের ঘাটে।দেশের নানা প্রান্তের ব্যবসায়ী সওদাগরেরা নৌকা দিয়েই বাণিজ্য করতেন। একটি মাত্র কালিমন্দিরে হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা অর্চনা চালিয়ে যাওয়ার সাথে মুসলিমসহ অন্যান্যরা উপভোগ করতো। যদিও তখনকার সময়ে হিন্দুদের আধিক্যই ছিল এ অঞ্চলে বেশি। পর্যায়ক্রমে মুসলিমদের বাসস্থান বাড়তে থাকে। প্রসঙ্গত, পাগলপন্থী বিদ্রোহের সূচনা করেছিলেন লেটিরকান্দার ‘টিপু পাগলা’।