জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাঁজা কি আসন্ন?
নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
গত ফেব্রুয়ারী মাসে জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া এখন নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন জেলখানার একটি কক্ষে সাঁজা খাটছেন। অপরদিকে একই ধরনের আরেকটি মামলা অথাৎ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট মামলার শুনানীও প্রায় শেষ পর্যায়ে আছে। ২০১১ সালের ৮ই আগস্ট তেজগাও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও হারিছ চৌধুরীসহ এই মামলায় মোট ৬ জন আসামী।
খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর গত ৭ মাস যাবৎ অসুস্থ্যতার কারন দেখিয়ে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট মামলার হাজিরা থেকে বিরত আছেন। উল্লেখ্য বকসি বাজার আলিয়া মাদ্রাসার পাশে পুরাতন কারাগারের মাঠে একটি স্থাপনায় বিশেষ আদালত বসিয়ে এতোদিন এই মামলার কার্যক্রম চলে আসছিল। কিন্তু গত সাত মাস যাবৎ বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ্যতার কারন দেখিয়ে হাজিরা দেওয়া থেকে বিরত আছেন। এই প্রেক্ষাপটে এই মামলাটিকে সচল করার জন্য ও দ্রুত এর বিচার কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য ৪ঠা সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপন জারি করে এই আদালত পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি স্যুটে স্থানান্তর করা হয়। পরদিন ৫ই সেপ্টেম্বর এই মামলার শুনানীর দিন ধার্য থাকায় খালেদা জিয়াকে হুইল চেয়ারে করে এই আদালতে হাজির করা হয়।
কিন্তু খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এই মামলার কার্যক্রমে উপস্থিত না থেকে তারা সেদিন বকসি বাজারে আগের সেই বিশেষ আদালতের বারান্দায় সারিবদ্ধভাবে বসে সময় কাটিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, আদালত স্থানান্তরের বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়নি। অপরদিকে সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু অদুরেই ছিল নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন জেলখানায় স্থানান্তরিত এজলাসটি। ইচ্ছা করলেই খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা সেখানে যেয়ে মামলার মোকাবেলা করতে পারতেন। সচেতনভাবেই তারা তা করেননি। তবে ঢাকা বারের সভাপতি ও বিএনপি পন্থী আইজীবী গোলাম মোস্তফা পর্যবেক্ষক হিসাবে সেদিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সরকার পক্ষের ও দুদকের আইনজীবীরা সেদিন আদলতে উপস্থিত ছিলেন।
বেগম খালেদা জিয়াকে সেদিন বেলা সোয়া বারটার সময় আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তিনি আদালতে বক্তব্যও দিয়েছিলেন। সেদিন তিনি আদালতে বলেছিলেন, ‘আমি অসুস্থ্য, এ অবস্থায় আমি আর আদালতে আসতে পারবোনা, যতদিন ইচ্ছা সাঁজা দেন, আমি আর আদালতে আসবোনা’। গত ৬ তারিখে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়া পল্টনের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছিলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ্য, এই অবস্থায় তিনি আর আদালতে যেতে পারবেন না, বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসা দরকার।
এই অবস্থার পরিপেক্ষিতে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারের নেতৃত্বে বিএনপি পন্থী খালেদা জিয়ার ৪ আইনজীবী কারাগারে বেগম জিয়ার সাথে দেখা করেন। এক ঘন্টা বেগম জিয়ার সাথে কথা বলে কারা ফটকে তারা সাংবাদিকদের ব্রিফিং দেন। সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের জানান, খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ্য, তার বাম পা ও বাম হাতে প্রচন্ড ব্যথা, তিনি হাটতে পারছেন না। অবিলম্বে বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসার প্রয়োজন, তিনি আর আদালতে যেতে পারবেন না।
বেগম জিয়ার এই অসুস্থ্যতার বিষয়টি ও তার পক্ষের আইনজীবীদের কথাগুলো বিশ্লেষন করলে সহজেই অনুমান করা যায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট মামলায় খালেদা জিয়ার দোষী সাবস্ত হওয়া মামলার বিষয়বস্তু ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে প্রায় নিশ্চিত। মামলার শুনানী যথাসময়ে শেষ হলে অচিরেই বেগম খালেদা জিয়া জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাষ্ট মামলায় সাঁজাপ্রাপ্ত হবেন। এমন ধারনা থেকেই বিএনপি পন্থী আইনজীবীরা এই মামলায় কালক্ষেপনের আশ্রয় নিয়েছেন বলে ধারনা করা হচ্ছে।