নরসিংদীর ৫ তারকা যারা আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন
নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদীর ৫টি আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ৫ জন। এখানে ১৪ দল কিংবা মহাজোটের কোন প্রার্থী নাই। মনোনীত ৫ জনের মধ্য ৪ জনই হলেন বর্তমান এমপি। আরেক জন গত ১৪ সালের নির্বাচনে পাশ করতে পারেন নি। তবে ৫ জনের সকলেই নরসিংদীর রাজনীতিতে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত।
নরসিংদী-৫, রায়পুরা আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান এমপি রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু। বাংলাদেশের ২য় বৃহৎ উপজেলা রায়পুরার তিনি ৫ বারের নির্বাচিত এমপি। ২০০৯-২০১৪ মেয়াদে তিনি টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রাজি উদ্দিন এর আগে আওয়ামীলীগ প্রেসিডিয়ামের সদস্য ছিলেন। রায়পুরার মানুষের কাছে অত্যান্ত জনপ্রিয় রাজি উদ্দিন আহমদ রাজু ১৯৬৯ ও ১৯৭০ সালে যথাক্রমে তৎকালীন জগনাথ কলেজের জিএস ও ভিপি ছিলেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছাত্রলীগ করতেন। তার মেয়াদকালে তিনি রায়পুরায় ব্যপক উন্নয়ন সাধন করেছেন। রায়পুরার যোগাযোগ ব্যবস্থায় তিনি বৈল্ববিক পরিবর্তন এনেছেন। স্কুল কলেজ, ব্রিজ কালভার্টসহ অসংখ্য উন্নয়ন মূলক কাজ হয়েছে তার আমলে। রায়পুরায় তাকে হারাতে পারে বিএনপির এমন হ্যাভি ওয়েট প্রার্থী নাই। ফলে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। রায়পুরার জনগনও নৌকার মাঝি হিসাবে তাকেই চাচ্ছেন।
নরসিংদী-৪, মনোহরদী-বেলাব আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন এডভোকেট নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। তিনিও এই আসন থেকে ৩ বার এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমান এমপি নুরুল মজিদ এর আগে যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন। আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় এই নেতা বেশ সজ্জন ও ভদ্র লোক হিসাবে পরিচিত। তার বিপরীতে বিএনপির সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল বিএনপি থেকে দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে বেশ গুঞ্জন শুনা যাচ্ছে। তবে এই আসনে ধানের শীষের সাথে নৌকার হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
নরসিংদী-৩, শিবপুর আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন জহিরুল হক ভূইয়া মোহন। আওয়ামীলীগের এই নেতা ২০০৮ সালে মান্নান ভূইয়াকে হারিয়ে প্রথম বারের মত এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি ২০১৪ সালে এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পান ও স্বতন্ত্র প্রা্থী শিল্পপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লার কাছে ব্যপক ভোটে হেরে যান। সিরাজ মোল্লা পরে আওয়ামীলীগে যোগ দিয়ে আওয়ামীলীগের সংসদ সদস্য হিসাবে আত্ন প্রকাশ করেন। তিনি আওয়ামীলী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। এবারও তারই মনোনয়ন পাবার কথা ছিল। কিন্তু শেষ সময়ে মোহনের মনোনয়নে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। তবে এই আসনে শেষ মুহূর্তে দলীয় মনোনয়নে পরিবর্তনের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। মোহনের থেকে সিরাজ মোল্লা এলাকায় বেশী জনপ্রিয় বলে সেখানকার ভোটাররা জানিয়েছেন।
নরসিংদী-২, পলাশ আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন ডাঃ আনোয়ারুল আশ্রাফ দিলীপ। ২০১৪ সালেও তিনি পলাশ থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। কিন্তু তারই আপন ভাই স্বতন্ত্র প্রার্থী পোটন খানের কাছে তিনি হেরে যান। এবার পোটন খান নির্বাচন করবেন না বলে জানা গেছে। তবে তাদের ফ্যামিলী পলাশে অনেক জনপ্রিয়। এই পরিবারের প্রতি রয়েছে পলাশের মানুষের ব্যপক আস্তা। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে এই এলাকায় ব্যপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। ফলে এলাকায় তার অবস্থা বেশ ভাল। অপরদিকে তার বিপরীতে রয়েছেন বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি ও মন্ত্রী আব্দুল মইন খান। তিনিও বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে এলাকার ব্যপক উন্নয়ন করেছেন। ফলে এই আসনে ধানের শীষ আর নৌকার মাঝে শক্ত লড়াই হবে বলে ভোটাররা ধারনা করছেন।
নরসিংদী-১, সদর এই আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছেন লেঃ কর্নেল(অবঃ) বীরপ্রতীক নজরুল ইসলাম হিরু। নরসিংদী সদরের অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ এই আসনটির ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি প্রথম বারের মত এমপি হন। ২০১৪ সালেও তিনি আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়ে এমপি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। তিনি নরসিংদী সদরসহ চর এলাকায় অনেক উন্নয়ন মূলক কাজ করেছেন। সদর আসনে ভোটারদের মাঝে তার ভাল ভাবমূর্তি আছে। সদর এই আসনে দলীয়ভাবে বিএনপির ভোটই বেশী বলে মনে করা হয়। ৯১, ৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনে এই আসনে জয় লাভ করে বিএনপির প্রয়াত নেতা সামসুদ্দিন এছাক। ২০০৮ সালে বিএনপির খাইরুল কবীর খোকনকে হারিয়ে নজরুল ইসলাম প্রথম এমপি নির্বাচিত হন এই সদর আসনে। এবার সদর এই আসনে বিএনপির খাইরুল কবীর খোকনের মনোনয়ন লাভের সম্ভাবনাই বেশী। ফলে ডাকসুর সাবেক জিএস খোকনের সাথে নজরুল ইসলাম হিরুর বেশ প্রতিদ্বন্ধিতা হবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।