পথ হারা বিএনপি ও প্রকৃত বিরোধী দলবিহীন নিরুত্তাপ সংসদ
নিউজ ডেস্কঃ বিডি খবর ৩৬৫ ডটকম
সামরিক শাসন দিয়ে শুরু অত্যান্ত ক্ষমতাশালী দল বিএনপি এখন আকাশে মেঘের ভেলার মত ভেসে বেড়াচ্ছে। মেঘ যেমন বাতাসের ইচ্ছায় নিরুদ্দেশ যাত্রা করে তেমনই আজ বিএনপির যাত্রা মেঘের ভেলার মত আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। নিজস্ব কোন দিক নাই, বাতাসই তাদের গতিপথ ঠিক করে দিচ্ছে। সামরিক ও গনতান্ত্রিক শাসন মিলিয়ে দলটি বেশ কয়েকবার দেশ শাসন করেছে। আর প্রবল প্রতাপশালী এই দলটি এখন নিথর, নিস্বব্দ হয়ে গেছে। কেন এমন অবস্থা হল, পিছনে আসল কারন কি?
আসলে বিএনপির জন্ম কোন নীতি-আদর্শ নিয়ে হয়নি। একমাত্র আওয়ামীলীগের বিরোধীতাই ছিল বিএনপির নীতি। আর আওয়ামীলীগের বিরোধীতাকারীরাই হয়েছিল দলটির নেতাকর্মী ও সমর্থক। আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে বিএনপির প্রচারনার মূল ইস্যু ছিল ধর্মীয় অনুভুতি ও আওয়ামীলীগকে ভারতের সাথে জড়িয়ে নানা অপপ্রচার। তবে হালে এসমস্ত অপপ্রচার মানুষ আর গ্রহন করছে না কিংবা তা মিথ্যা হিসাবে প্রমান হয়েছে।
আওয়ামীলীগ নাস্তিকের দল-এই অসত্য ভাষনটি এক সময় শিক্ষা দিক্ষায় পিছিয়ে থাকা এদেশের বিশাল জনগোষ্টী আসলেই বিশ্বাস করত। তাই তারা আওয়ামীলীগকে পছন্দ করতো না। এদেশের ধর্মভীরু সহজ সরল মানুষগুলি মনে করত কিংবা তাদেরকে বিশ্বাস করাতে সমর্থ হয়েছিল বিএনপি নেতৃত্ব। তাই এই শ্রেনীর মানুষের সমর্থন বেড়ে গিয়েছিল বিএনপির প্রতি। আর এদেশের মসজিদ, মাদ্রাসা ও নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আওয়ামীলীগকে ঘিরে নানা ধরনের কুৎসা রটানো হত। এই কুৎসাগুলি ওই শ্রেনীর মানুষ সত্য বলে ধরে নিয়েছিল। দেশে নানা কারনে শিক্ষার হার বেড়ে যাওয়াতে ও আধুনিক প্রযুক্তির বদৌলতে মানুষ অনেক কিছু জানতে পারছে। আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে যে ধর্মীয় অপপ্রচার তা মানুষ বুঝতে সক্ষম হয়েছে। ফলে আওয়ামীলীগের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গিও পরিবর্তন হয়েছে। আর এই কারনেই বিএনপি সমানভাবে পিছিয়ে পড়েছে।আওয়ামীলীগকে জড়িয়ে বিএনপি ভারতের জুজুর ভয় দেখাতো। বলা হত আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় গেলে এই দেশে মসজিদে ওলু ধ্বর্নি শুনা যাবে, মসজিদ মন্দির হয়ে যাবে, এদেশ ভারতের কাছে বিক্রি করে দিবে, দেশ হবে ভারতের অঙ্গরাজ্য। হালে এই সব অপপ্রচার মানুষ আর বিশ্বাস করে না। মানুষ দেখেছে আওয়ামীলীগ অতীতে তিনবার ক্ষমতায় ছিল, একবারও মসজিদে ওলু ধ্বর্নি শুনা যায়নি, কোন মসজিদ মন্দির হয়ে যায়নি, দেশ ভারতের কাছে বিক্রি করা হয়নি, ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিনীত হয়নি আমার দেশ।
মানুষ দেখেছে আওয়ামীলীগ যতবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই অন্য যে কোন সরকারের তুলনায় প্রভুত উন্নতি সাধন করেছে সর্বক্ষেত্রে। আওয়ামীলীগের আমলে দেশ সবচেয়ে বেশী উন্নত হয় সকল ক্ষেত্রে। এটা বার বার জনগনের কাছে প্রমানিত হয়েছে। এদেশের বড় বড় যত অর্জন তা আওয়ামীলীগ সরকারের আমলেই হয়েছে। তাই আওয়ামীলীগের জনমত এখন তুঙ্গে। মানুষ বুঝতে পেরেছে এদেশের সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য আওয়ামীলীগ সরকারই দরকার, আওয়ামীলীগই জনগনের প্রকৃত বন্ধু।
অপরদিকে মানুষ বিএনপির নেতিবাচক কর্মকাণ্ড দেখেছে, বিএনপির শাসনামল দেখেছে ও আওয়ামীলীগের শাসনামলের সাথে তুলনা করছে এবং বিস্তর তফাৎ দেখতে পাচ্ছে। তাই বিএনপির মিথ্যা জনপ্রিয়তায় ধ্বস নেমেছে। অপরদিকে দেশ শাসন নিয়ে বিএনপির কোন মিশন, ভিশন কিংবা অবজেক্টিভ নাই। একমাত্র আওয়ামীলীগের বিরোধীতার নীতি ও ভিশন নিয়ে জনগন থেকে প্রত্যাখ্যত হচ্ছে বিএনপি। আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে সীমাহীন মিথ্যাচার না করে দেশের কথা চিন্তা করে নতুন কর্মসূচী নিয়ে বিএনপি জনগনের কাছে না আসলে অচিরেই দলটি বিলীন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
৩০শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই দেশের সিংহভাগ মানুষ আওয়ামীলীগকে সমর্থন করেছে। তাই তারা বিপুল ভোটে আওয়ামীলীগকে জয়যুক্ত করেছে। এমন কি আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তার কাছে ধারাতেই পারেনি বিএনপি। ফলে নির্বাচনে বিএনপির সূচনীয় পরাজয় ঘটেছে। দলটি মাত্র ৫ট আসন পেয়েছে। এই ৫টি আসন নিয়ে তারা বিরোধী দলেও যেতে পারছে না। ইতিমধ্যই বিএনপির থেকে অধিক সংখ্যক আসন পেয়ে এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি সংসদে প্রধান বিরোধী দল হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই অবস্থায় ৫টি আসন নিয়ে সংসদে বিএনপি কি ভুমিকা রাখতে পারে তা দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে। তবে প্রানবন্ত সংসদ আশা করা খুবই কঠিন।