দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানের ফলে আওয়ামীলীগ সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়বে কি?
বিডি খবর ৩৬৫ ডটকমঃ
গত দুই সপ্তাহ ধরে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার অভিযান পরিচালনা করে আসছে। সরকার তথা আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের বাঘা বাঘা দুর্নীতিবাজদের গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে এই অভিযান শুরু হয়। ইতিমধ্য গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে আওয়ামীলীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের অনেক নেতাকে। এদের মধ্য রয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট, ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া, যুবলীগ নামধারী টেন্ডার মাফিয়া জিকে শামীম, কৃষকলীগের শফিকুল আলম ফিরোজসহ আরো অনেকে। এদের বিরুদ্ধে অবৈধ ক্যাসিনোর ব্যবসা, মদ-জুয়ার ব্যবসা, ব্যপক চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও টেন্ডারবাজির অভিযোগ রয়েছে। এরা সকলেই দেশের টাকা বিদেশে পাচারে জড়িত। এরা শতশত কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। আইন শৃংঙ্খলা বাহিনীর অনুসন্ধানে এদের নানা অপকর্মের তথ্য বেড়িয়ে আসছে।
সম্রাটসহ দৃত অন্যরা বেশ প্রভাবশালী। এদের প্রত্যেকেরই রয়েছে নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী। আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মেনেজ করেই তারা তাদের অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এখন আইন শৃংঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতায় অনেক অপরাধী দেশে বিদেশে পালিয়ে আছে। আরো অনেককেই ধরার চেষ্টা চালাচ্ছে র্যব। অনেককে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বেড়িয়ে আসছে নানা তথ্য। এই অভিযান নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক অংগন। সুশীল সমাজও নড়ে চড়ে বসেছে। পক্ষে বিপক্ষে চলছে নানা যুক্তিতর্ক। এই অভিযানের ফলে আওয়ামীলীগ কি লাভবান হবে, নাকি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই নিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষন।
সরকার দলীয় লোকজন এই অভিযানে ধরা পড়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে সরকারের পদত্যগ চাওয়া হয়েছে। তারা বলতে চাচ্ছে এতে প্রমান হয় সরকার দলীয় লোকজন দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, ক্যাসিনোর ব্যবসাসহ নানা অপকর্ম করছে। কাজেই সরকারকে এখনই পদত্যগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজ দলের লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যদি সরকারকে পদত্যগ করতে হয় তা হলে কেন এই অভিযান অব্যহত রাখবে সরকার? তবে দেশের স্বার্থে এই অভিযান অব্যহত রাখলে সাধারন মানুষ খুশি হবে। সরকার বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরসহ সাধারন মানুষ যদি সরকারের ভাল কাজের প্রশংসা না করে তা হলে সরকার ও সমাজে ভাল কাজ করার প্রবনতা কমে যাবে। এতে দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে।
বামপন্থী দলগুলোর পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সরকারের দুর্নীতি বিরোধী এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হয়নি। তথাকথিত সুশিল সমাজের পক্ষ থেকেও তেমন কোন প্রতিক্রিয়া আসেনি। এরা এই অভিযান নিয়েও রাজনৈতিক বক্তব্য দিচ্ছে। এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে কোথাও একটি মিছিলও হয়নি। তবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের দুর্নীতি বিরোধী এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে তা অব্যহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
সমাজে ভাল মানুষের বড় অভাব। তাই ভাল কাজের প্রশংসার লোকও কম। কথায় আছে যেমন কুকুর তেমন মুগুর। জনগন যেমন শাসকও তেমনভাবেই দেশ শাসন করার কথা। কিন্তু তেমন করে দেশ শাসন করলে দেশ পিছিয়ে যাবে। সরকার ক্ষমতায় থাকুক আর নাই থাকুক ভাল কাজ করলে দেশ এগিয়ে যাবে, সামগ্রিকভাবে দেশের অগ্রগতির জন্যভাল হবে। বর্তমান শুদ্ধি অভিযানের ফলে সরকারী দল তথা আওয়ামীলীগ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও অভিযান অব্যহত রাখা উচিৎ। আর দেশবাসীর দায়িত্ব হবে সরকারের এই অভিযানে সমর্থন করে দেশ থেকে চাদাবাজ, টেন্ডারবাজ, মদ-জুয়া, আর ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের অবৈধ সকল ধরনের তৎপরতা বন্ধ করতে সরকারকে সহযোগিতা করা। সম্প্রতি সরকার প্রধান শেখ হাসিনা এই অভিযান অব্যহত রাখার কথা জানিয়ে আসছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।