পশ্চিমারা তৃতীয় বিশ্বকে শাসন অব্যহত রাখতে চায়
ভূরাজনৈতিক কারনে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে ছলে বলে কুটকৌশলে শাসন করতে চায়। এসমস্ত দেশে স্থিতিশীলতা থাকলে পশ্চিমাদের ঘা জ্বলে। তারাই তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্নদেশে রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নানা অস্থিরতা কুটনীতির মাধ্যমে সৃষ্টি করে। এসমস্ত দেশে বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি করে মোড়লীগিরি করে নিজেদের আধিপত্ত কায়েমের চেষ্টা করে। যে সমস্ত দেশে তারা তাদের আধিপত্ত কায়েমে ব্যর্থ হয় সে সমস্তদেশকে তারা নানাভাবে চাপে রেখে করায়ত্ত করতে চায়। সেই চাপ প্রয়োগে তারা জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংকসহ নানা সংস্থাকে ব্যবহার করে। অসমর্থিত সূত্র থেকে ও তাদের নিজেদের অর্থায়ন করা এজিও এর মাধ্যমে ভূয়া তথ্য দিয়ে তারা এ কাজগুলি করে থাকে। বিগত ১ বছর ধরে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের এমন চাপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছি।
২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিগত ১৫ বছরে আওয়ামীলীগ সারাদেশে ব্যপক উন্নয়ন করে দেশের মানুষের ব্যপক সমর্থন পেয়েছে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তার কাছে বিরোধী রাজনীতি ভেস্তে গেছে। ভারত-মায়ানমারের সাথে সমূদ্রসীমা বিজয়, ভারতের সাথে ছিটমহল সমস্যার সমাধান, বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে নিয়ে যাওয়া, দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধি ও দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৩০০ ডলার থেকে ২৭শ ডলারে নিয়ে যাওয়া এই সবই শেখ হাসিনার সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়েছে। মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রেরনও শেখ হাসিনার সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হয়েছে। বহুবিদ বাধা থাকা সত্ত্বেও নিজজ্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন সম্ভব হয়েছ। আজ দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলসহ সারাদেশের মানুষ এর সুফল ভোগ করছে। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিনত হয়েছে। শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্ব সারাবিশ্বে প্রশংসা পাচ্ছে।
সারাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যপক উন্নয়ন হয়েছে। মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে ফ্লাইওভার নির্মাণ করে মানুষের চলাচলকে সহজ করে দিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার। ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরন, ঢাকা-ময়মনসিং মাহাসড়কে ৪ লেনে উন্নীতকরন, মাওয়া-ভাঙ্গা সড়কপথ, পদ্মাসেতুতে রেল চলাচলের ব্যবস্থা সবই করে দিয়েছে আওয়ামীলীগ সরকার। চট্রগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ করে ঢাকা-কক্সবাজার সরাসরি ট্রেন যোগাযোগের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে নিয়েছে শেখ হাসিনার সরকার।
আজ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌছে গেছে। শিক্ষার হার অনেক বেড়ে গেছে, মানুষের গড় আয়ূ বৃদ্ধি পেয়ে ৭২ বসর ছাড়িয়ে গেছে, শিশু মৃত্যু হার অনেক কমেছে, মাতৃমৃত্যু হারও অনেক কমেছে। এ সবই হয়েছে শেখ হাসিনার সরকারের মাধ্যমে। আইসিটি খাতে ব্যপক উন্নয়ন শেখ হাসিনাই করেছে। আর শেখ হাসিনা সরকারের এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারনে দেশের ৭০ ভাগ মানুষ আজ শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে প্রশংসার সাগরে ভাসাচ্ছে। দেশে খাদ্য উৎপাদন বেড়েছে, খাদ্যে স্বয়ং সম্পর্ন হয়েছে দেশ। সারাদেশে ব্যপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। বেকারের সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু বাংলাদেশের এই অগ্রগতিতে পশ্চিমারা নাখোশ। কেননা তারা চায় বাংলাদেশে মেরুদন্ডহীন দুর্বল সরকার। তারা দেশ ও দেশের বাইরে সরকারের বিরুদ্ধে নানা প্রপাকান্ডা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকারের কট্টর বিরোধী কিছু অকৃতজ্ঞ মানুষ সরকারের এসব উন্নয়নে অন্তজ্বালায় ভুগছে। তারা পশ্চিমাদের সাথে আতাত করে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু তাদের সকল ষড়যন্ত্র দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে ব্যর্থ হয়ে গেছে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে বিদেশী প্রেসক্রিপ্টশনে আর দেশ চলে না। বিদেশী দূতাবাসগুলির দৌড়ঝাপ কমে গেছে। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীন বিষয় নিয়ে দূতাবাসগুলি আর রাজনীতি করতে পারছে না। কিন্তু পশ্চিমা দূতাবাসগুলি তাদের দেশের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অনৈতিক ও বেআইনী চাপ অব্যহত রেখেছে। তারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বন্ডুল করার জন্য সমস্ত রকমের অযাচিত হস্তক্ষেপ করেছে। বিএনপি-জামাতকে তারাই নির্বাচনে যেতে নিষেধ করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা সারাদেশে অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিয়েছেন। এতে পশ্চিমাদের গাত্রদাহ আরও বেড়ে গেছে। পশ্চিমাদের দেশ থেকে আসা নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও শান্তপূর্ন হয়েছে বললেও দেশগুলি নির্বাচন নিয়ে নানা ধরনের অযাচিত প্রশ্ন তুলছে। ভারত-চীনসহ এশিয়ার প্রায় সব দেশ, রাশিয়া, মিশর, মরক্কো, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ আরও অনেক দেশের রাষ্ট্রদূতরা শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে নির্বাচনে জয়লাভ করায় অভিনন্দন জানিয়েছে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে পশ্চিমা রাহুগ্রাস থেকে শেখ হাসিনা দেশকে মুক্ত করেছেন। তাতে পশ্চিমারা আর বাংলাদেশে তাদের আধিপত্ত বিস্তার অব্যহত রাখতে পারছে না। তারা এখন বাংলাদেশকে অস্থির করতে নতুন খেলায় মেতে উঠবে। কিন্তু শেখ হাসিনার নতুন সরকারও অতীতের মত এসব ষড়যন্ত্র রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।