ইরানের হামলায় ইসরায়িলের ক্ষয়ক্ষতির কোন খবর আসছে না কেন?
১লা এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানিয়ান দূতাবাসে বিমান হামলা চালিয়ে ইরানের বিপ্লবী গার্ডের ২ উর্ধতন কর্মকর্তাসহ ৭ জনকে হত্যা করে ইসরায়িল। সেদিনই এ হামলার বদলা নেওয়ার ঘোষনা দেয় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। শনিবার মধ্যরাতে ৩ শতাধিক ড্রোন ও মিসাইল দিয়ে ইসরায়িলে হামলা চালায় ইরান। এই হামলায় ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে এখনো মুখ খোলেনি ইসরায়িল। এমনকি নামকরা কোন সংবাদ মাধ্যমেও ক্ষয়ক্ষতির খবর আসেনি। ইসরায়িলের ক্ষেপনাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা অত্যান্ত শক্তিশালী। তাই অধিকাংশ ড্রোন ও মিসাইল হয়ত প্রতিহত করতে পেরেছে তাদের প্রতিরক্ষা সিস্টেম। ইসরায়িল ও তার মিত্ররা দাবি করছে ৯৯% ড্রোন ও মিসাইল তারা আকাশেই ধ্বংস করেছে। যা একেবারেই অসম্ভব ব্যপার। অন্ততঃ কিছু ড্রোন ও মিসাইল লক্ষবস্তুতে আঘাত করার কথা। কিছু ক্ষয়ক্ষতি হওয়ারও কথা। কিন্তু খবরে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কোন খবর আসছে না। কারন কি?
এর কারন হতে পারে ইরানের এই সফল হামলা ইসরায়িল ও তার মিত্রদের জন্য লজ্জার ও দুর্বলাতার প্রকাশও বটে। তারা বিশ্ববাসীকে জানাতে চাচ্ছে যে ইরানের হামলায় ইসরায়িলের কোন ক্ষতি হয় নাই। তাতে করে ইসরায়িলকে সমর্থনকারী পশ্চিমা দেশগুলির মনোবল চাঙ্গা থাকবে। অপরদিকে ইরানকে সমর্থনকারী মুসলিম বিশ্ব ইসরায়িলের ক্ষয়ক্ষতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করবে। মুসলিম বিশ্বের মনোবল ভেঙ্গে যাবে।
ইরানের হামলার ২০ ঘন্টা পরেও ইসরায়িলের পক্ষ থেকে ইরানে পাল্টা হামলা হচ্ছে না। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বৃটেন ইসরায়িলের পাশে থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। আসলে এই প্রতিশ্রুতি ফাঁকা বুলিও হতে পারে। আবার বাইডেন বিবৃতি দিয়েছে যে তারা ইরানে পাল্টা হামলা সমর্থন করবে না। আসলে এই সময়ে পশ্চিমারা আরও একটি যুদ্ধে জড়িয়ে নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমান আর বাড়াতে চাচ্ছে না বলেই মনে হয়। ওদিকে পশ্চিমাদের নির্দেশে ও মদদে ইউক্রেন রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পরলেও রাশিয়ার কাছে ভূমি ও জানমাল প্রতিনিয়তই হারাচ্ছে। পশ্চিমারা ইউক্রেনে ব্যপক অস্ত্র ও আর্থিক সহযোগিতা করে নিজেরাই এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে। গোটা পশ্চিমা বিশ্ব এক হয়েও ইউক্রেনকে যুদ্ধে সফলতা এনে দিতে পারছে না। এমন অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে আরও একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পরলে পশ্চিমাদেরই ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পরতে হবে। তাই ইসরায়িল আপাততঃ ইরানের হামলার কোন প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ইরানের পক্ষ থেকে আরো ব্যপক পাল্টা হামলা্র সন্মুখীন হবে না বলেই মনে হচ্ছে। ইসরায়িলের গোলাবারুদের একটা ব্যপক অংশ তারা হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্যয় করে ফেলেছে। অপরদিকে সামরিক সরঞ্জাম ও যুদ্ধের সক্ষমতাও ইসরায়িল থেকে ইরানের বেশী। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে ইরান নিঃশর্তভাবে রাশিয়াকে ড্রোন দিয়ে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়িলের সাথে ইরান যুদ্ধে জরিয়ে পড়লেও রাশিয়ার সমর্থন পাবে। রাশিয়া হয়ত উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে ইরানকে সহায়তা করবে। তবে শেষমেশ ঘটনা কোন দিকে যায় তা সময়ই বলে দিবে।