আওয়ামীলীগের সাথে আতাত রয়েছে তারেক জিয়ার!
রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নাই। রাজনীতি যদি হয় শুধু স্বার্থ নির্ভর তা হলে এ কথা একেবারেই সতসিদ্ধ। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কারো কাছে নিন্দিত আবার কাছে নন্দিত রাজনীতিবিদ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মূলত তিনিই বিদেশে থাকা তারেক জিয়ার নির্দেশ দলীয়ভাবে বাস্তবায়ন করেন। বাংলাদেশে বিএনপির রাজনীতির যতটুকু অবশিষ্ট আছে এ দুজনের ইচ্ছাতেই তা ঘটে থাকে। বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তারেক জিয়া ২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত সরকারের চাপে মুচলেকা দিয়ে লন্ডন চলে যান। অপরদিকে বেগম খালেদা জিয়াও আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ২০১৮ থেকে সাঁজা ভোগ করছেন। জেলে যাবার আগে তরিগরি গঠনতন্ত্র সংশোধন করে বিদেশে অবস্থানরত তারেক জিয়াকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব দেন বেগম খালেদা জিয়া। সেই থেকে তারেক জিয়ার একক নির্দেশেই বিএনপি চলে। আর তার নির্দেশ দল ও মিডিয়ার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেন রুহুল কবির রিজভী। নানা রকম ছন্দ ও কাব্যিক ভাষা ব্যবহারে তার বিবৃতিগুলি সকলের নজরকাড়ে।
৭ই জানুয়ারীর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি নির্বাচন বর্জন ও সরকার পতনের একদফা আন্দোলন করে। এর ফলে সারাদেশে বিএনপি সহিংস কর্মকাণ্ড চালায়। অগ্নিসন্ত্রাসের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার নানারূপ চেষ্টা করে। এই আন্দোলন চলাকালে বিএনপির অধিকাংশ সিনিয়র নেতা গ্রেপ্তার হন। মির্জা ফখরুল, আমির খসরু মাহমুদ চোধুরী, মির্জা আব্বাস, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির সিনিয়র আরও অনেক নেতা গ্রেপ্তার হন। এই সময়ে বিএনপির রিজভী প্রতিদিনই রাজধানীর কোথাও না কোথাও প্রত্যুষে পিকেটিং করেছেন ৮/১০ জন নেতাকর্মী নিয়ে। তাকে পুলিশ কোথাও খোঁজে পায়নি কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারেনি-এমনটি একেবারেই অবিশ্বাস্য। তাকে গ্রেপ্তারে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে তেমন তৎপরতাও লক্ষ্য করা যায়নি। তাতে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন হয়ত কোন গোপন সমীকরনের কারনে রিজভী সাহেব গ্রেপ্তার হচ্ছেন নাই। তাহলে কি সেই সমীকরন-
১। বিএনপি যদি নির্বাচনে আসে এবং সংখ্যা গরিষ্টতা নিয়ে সরকার গঠন করে তাহলে এই সরকারের প্রধানমন্ত্রী কে হবেন? নিশ্চয়ই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের প্রধানমন্ত্রী হবার সম্ভাবনাই বেশী। একবার যদি ফখরুল প্রধানমন্ত্রী হয়ে যান তাহলে বিএনপির ক্ষমতা চলে যাবে তার হাতে। সেখানে তারেক জিয়া আস্তে আস্তে গুরুত্বহীন হয়ে যাবেন। তাই তারেক জিয়া হয়ত চাচ্ছিলেন বিএনপি নির্বাচনে না যেয়ে সরকার বিরোধী কিংবা নির্বাচন বর্জনের আন্দোলন নিয়েই ব্যস্ত থাকুন।
২। তারেক জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামী। সরকার চাইলে তাকে লন্ডন থেকে ফিরিয়ে এনে জেলে রাখা সম্ভব। এর ফলে তারেক জিয়াকে জেলেই কাটাতে হবে অনিদৃষ্টকাল। তারেক জিয়া হয়ত চাননা দেশে ফিরে তিনি জেল খাটবেন। তাই সরকারের সাথে তারেক জিয়ার এমন আতাত থাকতেই পারে যাতে করে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার তৎপর না হয়। সরকার এমনটি এমনি এমনি করবে না। নিশ্চয় কোন শর্ত দিবে সরকার। শর্ত হতে পারে বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। ফলে সরকার তথা আওয়ামীলীগ সজজেই বিএনপিবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে আবার ক্ষমতায় আসতে পারবে। আর তারেক জিয়াও আরাম আয়াসে লন্ডনে থাকতে পারবে। বিএনপির রিজভী যেহেতু তারেকের খাস লোক তাই সরকারের সাথে বুঝাপড়ার কারনেই হয়ত তাকে গ্রেপ্তার করেনি আওয়ামীলীগ সরকার। যার ফলে এমনটি ধারনা করা যেতেই পারে ৭ই জানুয়ারীর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের সাথে তারেক জিয়ার আতাত ছিল এবং তা এখনো আছে।