২৮শে অক্টোবর বিএনপি সহিংসতা চালাবে তা মির্জা ফখরুল কি জানতেন?
গত ৬ মাস ধরে রাজধানীসহ সারাদেশে বিএনপি ভাংচুর, জ্বালাও-পুড়াও ও মানুষ হত্যা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ ২৮শে অক্টোবর বিএনপির নয়া পল্টনের সমাবেশকে ঘিরে তাদের কর্মীরা প্রধান বিচারপতির বাস ভবনে ভাংচুর চালায়, বিচারপতিদের আবাসস্থলে প্রবেশ করে ভাংচুর চালায়, পুলিশ বক্সে আগুন দেয়, গ্যারেজে রাখা গাড়িতে আগুন দেয়। ৩১ জন সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করে। ১ জন পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে ও একাধিক বাসে আগুন দেয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে একশনে যায় পুলিশ। বিএনপির সভামঞ্চ থেকে ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরদিন হরতালের ঘোষনা দিয়ে সভামঞ্চ ত্যগ করে। সভা হয়ে যায় পন্ড। দলীয় কর্মীরা আশপাশের এলাকাজুড়ে ব্যপক তান্ডব চালায়। অবশ্য বিএনপি আগেই ঘোষনা করেছিল ২৮শে অক্টোবর থেকে আন্দোলনের মহাযাত্রা শুরু হবে। আর এ জন্য সারাদেশ থেকে নেতাকর্মীদের ঢাকায় জমায়েত করেছিল।
বিএনপিতে দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি গ্রুপ চাচ্ছে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে ও বিদেশীদের দিয়ে সরকারকে চাপে ফেলে নির্বাচনে ফায়দা লাভ করা। এ গ্রুপটি অপেক্ষাকৃত শান্ত। অপরগ্রুপটি চাচ্ছিল জ্বালাও পোড়াও হরতাল-অবরোধের মাধ্যমে নির্বাচন বাঞ্চাল করা। এই গ্রুপটি উগ্রপন্থী এবং এরা তারেক জিয়ার কট্টর সমর্থক। এই গ্রুপটি চাচ্ছে নানা রকম গুজব রটিয়ে হরতাল-অবরোধ ও জ্বালাও পোড়াওয়ের মাধ্যমে অসাংবিধানিক সরকার কায়েম করে তার মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়া। তা না পারলে নির্বাচন বাঞ্চাল করা। এই গ্রুপটির নেতাকর্মীরা অপেক্ষাকৃত বয়সে তরুন।
প্রথম গ্রুপটি জানে যে তারা হরতাল অবরোধ কিংবা জ্বালাও পোড়াওয়ের মাধ্যমে এই সরকারকে হটিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কায়েম করা যাবে না। তবে সরকারকে চাপে ফেলে নির্বাচনে ফায়দা লুটা যাবে। এরা জানে যে নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগকে পরাজিত করা যাবে না। এদের টার্গেট কিভাবে বেশী আসনে জয়লাভ করা যায়। এই ভাবনায় ফখরুল সাহেব হয়ত সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হতে পারবেন। তাই ফখরুল ইসলামসহ এই গ্রুপের পক্ষের যারা আছেন তারা চাচ্ছেন নির্বাচন হউক। নির্বাচনে যদি বিএনপি সরকার গঠন করতে পারে তাহলে তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরেরই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কথা। যেহেতু বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া দুজনেই দন্ডপ্রাপ্ত। ফখরুল একবার প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেলে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার গুরুত্ব কমে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই তারেক জিয়া এমনটি চাবেন না।
অপরদিকে তারেক জিয়ার প্রথম উদ্দেশ্য হলো নির্বাচন বাঞ্চাল করা। সেই জন্যই তারেকের অনুসারীরা তারেকের নির্দেশে প্রভাবিত হয়েই ২৮শে অক্টোবর কাকরাইলে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল। জ্বালাও-পোড়াও, পুলিশ মেরে, বাসে আগুন দিয়ে নির্বাচন বাঞ্চালের চূড়ান্ত খেলায় মেতে উঠেছিল। তারেক চাচ্ছে না বিএনপির ক্ষমতা অন্যের হাতে চলে যাক। ফলে ২৮শে অক্টোবরে বিএনপি নেতাকর্মীরা সহিংস হবে এইটা মির্জা ফখরুলের জানা না ও থাকতে পারে। কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দায় এড়াতে পারেন না। কেননা পুলিশের দেওয়া ২০টি শর্ত মেনেই সেদিনের জনসভার অনুমতি মিলেছিল।